বিগ ব্যাং বনাম ভারতীয় শাশ্বত মহাবিশ্ব
বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুসারে, প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে এক সিঙ্গুলারিটি থেকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি। পক্ষান্তরে, ভারতীয় দর্শনে সৃষ্টি–স্থিতি–প্রলয় চক্র চলছে চিরকাল। এখানে সৃষ্টি বা ধ্বংসের একক মুহূর্ত নেই, বরং তা চক্রাকারে চলতে থাকে।
বিগ ব্যাং তত্ত্বের দুর্বলতা ও ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি
১. সিঙ্গুলারিটি – শূন্য থেকে সবকিছু?
কীভাবে কিছুই ছিল না, সেখান থেকে সব কিছু হল? ভারতীয় দর্শন বলে, সব কিছু প্রকাশ পায় এক চিরন্তন, অব্যক্ত বাস্তবতা থেকে—যেমন প্রকৃতি বা ব্রহ্ম।
২. হরাইজন সমস্যা – সমান তাপমাত্রা কেন?
দূরবর্তী অঞ্চলগুলির তাপমাত্রা কীভাবে একই রকম? ইনফ্লেশন থিয়োরি এক সম্ভাবনা দিলেও এটি যাচাই হয়নি। ভারতীয় দর্শনে এই সাম্যতা ঋত বা কসমিক অর্ডারের অংশ।
৩. ফ্ল্যাটনেস সমস্যা – এত নিখুঁত শুরু?
মহাবিশ্বের এত নিখুঁত সমতলতা কি কাকতালীয়? নাকি এটি এক অন্তর্নিহিত সুষম শক্তির প্রতিফলন, যেমন ভারতীয় দর্শনে বলা হয়েছে?
৪. ডার্ক ম্যাটার ও এনার্জি – ৯৫% অজানা!
আমাদের মহাবিশ্বের অধিকাংশ অংশ অজানা পদার্থ ও শক্তির উপর নির্ভরশীল—যাদের অস্তিত্ব এখনও ধরা পড়েনি। ভারতীয় দর্শনে সূক্ষ্ম শক্তি ও চেতনার ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ।
৫. প্রাচীন গ্যালাক্সির আগমন – সময়রেখার বিপরীত?
শুরুতেই বিশাল ও পরিপক্ব গ্যালাক্সির সন্ধান—এটা কি প্রমাণ করে না যে মহাবিশ্ব আরও পুরাতন ও বিস্তৃত, যেমন বলা হয়েছে ভারতীয় कल्प-এর ধারণায়?
পশ্চিমের মনোভাব – চক্র নয়, শুরু খোঁজা
বিগ ব্যাং একক শুরুয়াতের ধারণা দেয়, যা খ্রিস্টীয় সৃষ্টিতত্ত্ব ও পাশ্চাত্য ইতিহাসে স্বাভাবিক। কিন্তু ভারত এক চিরন্তন ও সচেতন মহাবিশ্বের কথা বলে। এই বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কি সেই গভীর জ্ঞানকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা?
ভারতের চিরন্তন তত্ত্ব – আরেকটি মহাজগৎ দর্শন
উপসংহার – এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির দরকার
বিগ ব্যাং সব প্রশ্নের উত্তর নয়। তার সীমাবদ্ধতা ও প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে আমরা প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের প্রতি নতুন করে তাকাতে পারি। চক্রাকারে বয়ে চলা এই মহাজগতের কথা আমাদের গ্রন্থে বহু আগেই লেখা হয়েছে।